ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের পা কেটে নিয়ে উল্লাস-মিছিল করার ঘটনায় কৃষ্ণনগর ইউপির চেয়ারম্যান জিল্লুর চেয়ারম্যানসহ ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে জিল্লুরকে ঢাকার কলাবাগান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে, রোববার (১২ এপ্রিল) গভীর রাতে থানাকান্দি গ্রামের কাউছার মোল্লাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের বায়েক গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ওই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে আরও ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুর রহমানের সাথে একই ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আবু কাউসার মোল্লার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতোপূর্বে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। তাতে কাউছার মোল্লা গ্রুপের জয়নাল আবেদীন ও তার চাচাতো ভাই দুলাল মিয়া নিহত হন।
ওই সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলে ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান গ্রেপ্তার হন। কয়েক মাস কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। বর্তমানে উভয়পক্ষের মধ্যে আদালতে ২৬টি মামলা চলমান।
এসব বিরোধের জের ধরে রোববার (১২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উভয় পক্ষের দাঙ্গাবাজরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে থানাকান্দি গ্রামে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায় দফায় হওয়া ওই সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের পক্ষের মোবারক মিয়া (৪৫) নামে এক যুবকের পা কেটে নিয়ে যায় কাউছার মোল্লার লোকজন। পরে তারা কাটা পা নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে এলাকায় মিছিল করে। এসময় প্রতিপক্ষের সাতটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে তারা।
এদিকে কাটা পা নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মিছিল করার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। নড়েচড়ে বসে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। পরে রোববার রাতে ও সোমবার সকালে জেলার বিভিন্ন স্থানসহ ঢাকা থেকে মোট ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের মূলহোতাসহ ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’